।। বাক্‌ ১১৭।। সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় ।।





সদাবসন্তম হৃদয়ারবিন্দে

এক ! আপাতবিরলে
লাগছে? আচ্ছা সরে যাচ্ছি। সৃ ধাতু, সৃ ধাতু, হে আবিশ্বপাতালে অপসৃয়মানতা, তব ক্ষান্তি মৃদু হোক। প্রসৃত হয়ে ওঠো শব্দাবলী, আজ প্রসারণের মুড নয়। সৃ ধাতু। সূর্য। সরে সরে যায়, নীল চাঁদোয়ায়। নীল নভোতলে, আপাতবিরলে কতো ঠাঁই আমি চরি রে, তোর মনোজবে, নিহিত ব্লোজবে আসি যাই, সোনা পরী রে... সরে সরে উত্তরায়ণ দক্ষিণায়ন, চক্রবৎ... সুতোয় বাঁধা। আপনি প্রভূ সৃষ্টিবাঁধন পরে, ঘাড় পেঁচিয়ে হাঁপায় চরাচরে... সরে যেতে যেতে পিঁপড়ে। একটি পিপড়ের তুলনায় মানুষ কতো বড়ো? একটি পিঁপড়ের পৃথিবী মানুষের তুলনায় অনেক বড়ো। পিঁপড়ে হতে পারি? মানবাত্মা, পিঁপড়ে হয়ে ওঠো...
একটু সরে গেলে পাঁচতলার ফ্ল্যাট, ছাদের ওপর হা হা। দূর দূর তক কোয়ী ইত্যাদিকি নামোনিশান নেহি হ্যায়। পিছিয়ে গেলে দিনযাপনের নিয়তকৃত্য। কেন্দ্রবৃত্ত, হিসাব বহির্ভূত। কেন্দ্র, পরিমাপহীন।
সরে যায় জলের কলস, এক হাত দূরত্ব হয়ে যায় দশ ফুট। তারি মাঝখানে পড়ে আধচেনা


বেওয়ারিশ


বাসি বিস্কুটটি ঘিরে পিঁপড়ে, কয়েকটি। যেমন হয়, ইতস্তত। খাবো তো খাবোই, নেবো সাধ্যমতো, আমি আছি, আমার স্যাঙাৎ আছে কতো, কে পায় কে যায় কোথা ঘরের ঠিকানা, অহো দিনকানা, রিপিটে ছড়িয়ে খাই এ জীবনখানি, কাঁহা তত্ত্ব কাঁহা ভাণ্ড আনি মানি জানি

সরে যাই সরে সরে যাই
নিয়ত গহনচোরা ঘাই
সরে যাচ্ছি চর ও অচরে
বুড়ি ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছি সরে
সরে যাচ্ছি ওগো বাসি ঋণ
ছড়িয়ে স্থাবর স্থিতিহীন
সরে যাওয়া মুছে ফ্যালা স্নেহ
সরে গেছি তোমার থেকেও



দুই ! আনি মানি জানি না
প্রাকৃত বাতাস জড়ো করে শব্দের অতীত বিন্দুনিচয়। অংশ ঠিকরে উঠল। মুহূর্তমাত্র। একবার চোখের পাতা পড়লো। আরেকবার পড়লো। মাঝখানে সরে গেল খানিকটা দ্রাঘিমা। অবস্থান অধিষ্ঠান হয়ে উঠতে চাইছে না। অধিষ্ঠিত হয়ে গেলেই মৃত মিউজিয়াম, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের ভিতর থেকে দ্রৌপদীর শাড়িকে লজ্জা দিয়ে বেরিয়ে আসে কাগজের পর কাগজের পর কাগজেরই রোল, অবস্থান ঢেকে যায়, পৃথিবীর সবুজ পাতারা সব বোঁটা ছিঁড়ে ছিঁড়ে কাগজে আহুতি হয়, কাগজে বিলীন হয়...
মরুভূমিও স্থান। স্থানিক সময়ে বিতর্কপ্রসূতি উহা, কালক্ষয় বন্ধ্যাগমনতুল্য, বদবক্ত। মরুকে তার জায়গাটুকু ছেড়ে দেওয়া গেছে এবং সবুজ নিয়ে ইয়ার্কি নয়, সাফ কথাটা আর কবে বুঝবি কালিদাস?
স্টেটমেন্ট, স্টেটমেন্ট, স্টেটমেন্ট ! কবিতা কই, পাগল?
আছে তো আছে, নেই তো নেই। আমার ব্যথা লাগছে, আমি চ্যাঁচাবো। কি কি নোট লাগছে, লাগছে কি লাগছে না তার ভুলঠিককমবেশিতে  বাল ছেঁড়া যায়
লাগছে? লাগছেনা?
(এখানে পাঠিকা/পাঠক একটি পছন্দসই ইমোজি কল্পনা করিয়া লউন)



তিন ! দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম
ভেলা টলমল করে, দাঁড়ও। দাঁড় জলকে সরায়, ভেলা জলে সরে। দাঁড় জল না কাটলেও ভেলা সরে। ইচ্ছাক্রম ও অনিচ্ছাক্রম। যেদিকে দাঁড় চায়, দাঁড় সেদিকে বায়। ইচ্ছা। দাঁড় ইচ্ছাক্রমে সংবরিত হলে জলের ইচ্ছায় ভেলা সরে। পাহাড় থেকে সমোচ্চশীল সমুদ্র। সরণ, সরলরেখা নয়। 
এমত অসরলরেখা বিন্যাসের জ্যামিতি প্রাগুক্ত খেয়ালবশে ( নিয়তি যেন বা, আহা! ) এসে দাঁড়ে বসে। দাঁড় উঠে আসে, দাঁড় উঠে যায়। মহাবিশ্বে উত্থিত হয়ে থাকে আদিঅন্তহীন লিঙ্গ।



No comments:

Post a Comment