।। বাক্‌ ১১৭ ।। রাণা বসু



                                                       ছবি :  সনৎ মাইতি




চ্যুতি’- একটা বাঙলা ইল্যুশনের নাম



সগুঁড়ো চিকচিক একটা বাজকুল স্মৃতি, যার কিচকিচ পৃথিবীভর্তি বায়ুযুগল ফিরে যাও কুসুম ও সেনাসামন্ত

স্থির একটা বল

 বলটা পড়ল কোথা থেকে কেউ জানে না কিন্তু বলটা পড়ল বসন্ত বৈরাগী একমনে টেবিলে বসে পড়ছিলেন মনস্তত্ত্ববিদ্যার একটা বই তাঁর পরবর্তী প্রোজেক্ট নিয়ে কদিন খুব ব্যস্ত তিনি বাড়ি থেকে বেরোন প্রায় বন্ধ তারওপর কদিন আগে বাইক অ্যাক্সিডেন্টে ডান পায়ে চোট চামেলি বলেই দিয়েছিল আগামী একমাস বাড়ি থেকে কোত্থাও নড়া যাবে না কাউকে কিছু না জানিয়েই বাড়ি থেকে প্রায় একা গোটা ত্রিশেক বই আর ল্যাপটপ হাতে বসন্ত তাই বেরিয়ে পড়েছিলেন সোজা কাঁঠালবাগানে এসে উঠেছেন এই জায়গাটা ওঁর খুব প্রিয় ওঁর নতুন প্রোজেক্ট - বাঁধভাঙ্গা বাণ আসলে যেখানে বাঁধ নেই কোনো, সেই সব জায়গায় বন্যা হতে কোনো বাধা নেই, সামান্য বৃষ্টির জলেই সেটা হতে পারে ওঁর কাজটা সেখানেই কিছু লোককে বাঁধ তৈরির কাজ দাও আর কাজটা শুরু করো ভরা বর্ষায় তারপর অবশ্যম্ভাবী বন্যার চিত্র দিয়ে শুরু করো কাজ এরপর স্থির বিশ্বাসে তোমার অবস্থান প্রচার করো প্রয়োজন মত চামেলি আর ওর বয়ফ্রেন্ড পার্থপ্রতীম দণ্ডপাটকে কাজে লাগানো যেতে পারে

"
বিশ্বাস" একটা নিস্ক্রীয় অঙ্গের নাম লেখাটা একটা স্ট্যান্ড পয়েন্ট পায়

পার্থর উপস্থিতি এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ অস্তিত্ব থাক না থাক ওর উপস্থিতি পুরো প্রোজেক্টটাকে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে অনায়াসে

বসন্ত অপেক্ষা করেন। পার্থ যদিও এ ব্যাপারে কিছু জানে না তবু ওর একটা কাজ খুব ডুবিয়ে দিচ্ছিল বসন্তকে প্রায় ধরা পড়তে পড়তে বেঁচে গেছেন। জনৈক শুভদীপ সান্যালকে বাঁধ তৈরির এস্টিমেট নিতে গিয়ে বলে ফেলেছিল এই বর্ষায় বাঁধে জল আটকে টারবাইন ঘোরানোর কথা উনি বুদ্ধিমান মানুষ ধরে ফেলেছিলেন প্রোজেক্টের ব্যাপার তারপরই তড়িঘড়ি পার্থকে চামেলির ডিভোর্স দেবার ব্যাপারটা প্রচার করে আবার কাঁকটিয়ার শুভম মান্নাকে কাজে লাগানো হয়েছেতবে ভয় একটা রয়েইছে -- এরা তো মনস্তত্ত্ব বোঝে না!


ছবি :  সনৎ মাইতি


বলটা পড়ে রয়েছে
টুবাই এল বলটা হতে নিয়ে বেরিয়ে গেল ওর একমাত্র লক্ষ্য যেন এর পরের বলটা বসন্ত কাকুর জানলার কাচটা ভেঙে দ্যায়

জাস্ট ফুচকা হয়ে পুটপুটালি রঙের হিম ও খাতাজোড়া শাল্কি চরিয়ে দোব ফল ও হিসাবের আঙুরতলায় দুকান ভরা আলমারি সাজিয়ে ২০১৪ ২০১৫ খেলব এ ব্যাপারের কোনও স্বব্যাপার নেই সিঙ্গল মল্টেরও কোনো চালচলন নেই যা আছে, তা অদ্ভূত শিথিল গয়নাউপুড় সাজুগুজু শিকারের অহেতুক কুলকুচো বাঘের গায়ের গন্ধ ও তেঁতুলপাতার যাবতীয় আাচার-আচরণ
এসব পড়ে খুঁতখুঁত ভিড়ের কোনো দারুণ নেই জলহাতির উল্টোপিঠে আপনিও দেখে ফেলতে পারেন মানুষের মৃত্যুকে অথবা মৃত্যুর মতো দেখতে মানুষকে অথবা একটি ফুটকি একটা ফুটকির ফুটে ওঠা থেকে আর একটা ফুটকির বিশ্বাস অব্দি চিরুনি লাগিয়ে আপনি ছেলেকে এ্যাক্সিডেন্ট আর মেয়েকে এ্যাক্সিডেন্টাল বানিয়ে দিতে পারেন শিকার করতে এসে স্বীকার আপনি করতেই পারেন জল থেকে কিভাবে জলীয় হয়ে উঠতে হয় পুকুরের জলে পা ধুয়ে সমুদ্র ফিল করাটা একটা দোষ যে দোষে দশাশ্বমেধ যজ্ঞ হয়ে যায়
এক সাবাশ থেকে অন্য সাবাশে কৃতজ্ঞতা লেগে থাকার কথা সেসব যুক্তি দিলে আমি নিজেকে অন্যকেউ ভাবতে পারি আমার একটা কৃষ্ণ আর তার সারথী থাকলেই আমি বিজ্ঞাপন হতে পারি তবেযে বিজ্ঞের কোনো আপননেই, তাকে বিশ্বাসী করে তোলা অসম্ভব
একটা সরলরেখা ততদূর বাড়ানো যায়, যতদূর বাড়ালে তাকে রেখাংশ বলতে দ্বিধা হয় স্বপ্ন সরলরেখা নয়, তাকে রেখাংশও বলা যায় না আর সুহাস তো দূর, তার আরেকটা স্বপ্নও নেই ওগুলো শুধুই শিস্, যেটা একটা শেয়ালের সাথে অনেকগুলো শেয়াল করে অথবা, খ্যাঁক্‌, যেটা একটা কুকুর আরেক কুকুরের শুনে করে

এখানে একটা বেড়াল অথবা রাজহাঁস আসতে পারে, যার শিশুপ্রবণতা আছে

একটা অন্ধকার হয়ে উঠতে চাই রোজ
সকাল থেকে রাত অব্দি চেষ্টা করি
ঘুমোতে যাই আবার চেষ্টা করি
যে অন্ধকার আলোর চেয়েও তীব্র
সাপের চেয়েও মারাত্মক
ছুরির চেয়েও তীক্ষ্ণ

যেভাবে শিশু হাসে
অথবা কাঁদে
ঠিক সেভাবে নয়
একটা প্রাইমারী অন্ধকারকে পেতে চেয়েছিলাম
আর তাই
প্রতিদিন ঘুমোতে যাই
কারন, অন্ধকার খোঁজার কাজ এখনও
পুরোটা শেষ হয়নি আমার



আলো আসলে অন্ধকারের পরমাণু কয়েকটা নির্দিষ্ট সংখ্যক আলো নিয়ে একটা অন্ধকার তৈরি হয় অন্ধকারের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে আলোর কতগুলো একক সেই পরিমান অন্ধকার তৈরি করবে আলোকে এখনও ভাঙা যায়নি কাজ চলছে এই লেখাটার পর আর কোনো আলো-আলোদি-আলোদা-আলোকা-আলোবু-আলোবা থাকবেনা কথা দিচ্ছি

আলো বিভিন্ন স্তরের হয় একটা নিম্নস্তরের আলো একটা উচ্চস্তরের আলোকে পিষে মেরে ফেলতে পারে শুধুমাত্র তার অন্ধকার গাঢ় হবার জন্য এখানে একটা মজার ব্যাপার পদার্থ সেই জিনিস যা দিয়ে কোনো বস্তু তৈরি হয় কিন্তু আলো অন্ধকারের একক হলেও অন্ধকার আলোকে ধারণ করে না কখনো বরং আলোর বিপরীতে থাকাতেই তার আনন্দ
রাস্তায় পড়ে থাকা একটা কাঠকে আমি মানুষ ভেবে তুলে আনলাম, তারপর তার ঠিকানা খুঁজে চললাম তার আরো দুদিন পর জানা গেল একটা নামগোত্রহীন লোক এমনিতেই নিখোঁজ কিন্তু এটা ঘটে ইচ্ছেমতো, যখন কিছু গুছিয়ে নেবার থাকে অথবা পুরো ঘেঁটে গেলে যেমন - কোনো শিশু কোনো প্রকল্পের স্বত্ত্বাধিকারী হতে পারে না শিশু অন্যদের কথা শুনে নেয় কারন সে তার চাওয়াগুলো পায়, যখন পায় না তখনই কাঁদে বা চেঁচায় অথবা কামড়ে দেয়

সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের মত
প্রেমগুলো তীব্র আর মনমরা ছিল
শীতের দূর্গ ফুরফুরে গন্ধ ছড়াচ্ছে
একদা বাঘ বলে পরিচিতরা
ইঁদুর আচরণ করছে
অথবা এটা কোনো সাধুবাদ

স্ক্যানার আজকাল মাথা খায়
ছিবড়ে করে দেয়
যেকোন বিবাহিত শব্দ
যার কোনও রেওয়াজ করতে পারা নেই
শুধু জ্বর আরোজ্বর




2 comments:

  1. ।। ভার্চ্যুয়াল রিয়ালিটি, আর সো কলড ডে টু ডে রিয়ালিটি। বাস্তব আর স্বপ্ন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একাধিক প্রোফাইল। কিছু ক্ষেত্রে লোকটা আছে, নামটা আলাদা, কিছু ক্ষেত্রে নামটা আছে লোকটা নেই। অদ্ভুতুড়ে সেক্সুয়ালিটি। বহুস্তরিক সম্পর্ক। ড্রিমলাইক মেটেরিয়ালস। রাইভ্যালরির আদল। হিংস্রতা। আগ্রাসন। উসকানি। ফুসলানি। এগুলোর ফলে জাত মানবিক প্রতিক্রিয়াগুলোর উদ্দিষ্ট কখনও কোনো অলীক অস্তিত্ব, কখনও খাঁটি একটা রক্তমাংসের লোক। সেইসঙ্গেই ভাষার গমনাগমনগুলোকে ধরা। প্রয়োজনে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেলিং, বা ইমোশনাল এক্সপ্লয়টেশন। যদি কেউ এ-রকম একটা প্রজেক্ট চালায়, তার হাতে থাকবে হ্যারিকেন, আর চোখে থাকবে সানগ্লাস। কারণ, এর কোনো মূল্য নেই। এটা কোনো আবিষ্কার নয়। সাব্লিমেটেড পুতুলখেলা মাত্র। কেউ যদি সাহিত্যকে বেবিফুড হিসেবে পেতে চায়, তাকে মানিয়ে যাবে। মানুষকে মানবিকতার স্তরে বোকা যারা বানাতে চায়, তাদের যে কোনো প্রজেক্ট শেষ অবধি ক্যান্সার-প্রজেক্ট।।

    ReplyDelete
  2. শুনে আসছি, অনুভব করছি কিছু ভূতুড়ে চরিত্র। অসহায় বোধ করেছি। বিরক্তিতে খিস্তি ছুঁড়েছি একা একাই।

    ReplyDelete