।। বাক্‌ ১১৭।। অভিষেক ঘোষ ।।





বার বার শূন্য বলা যায় নি

বত্রিশ কোটি আছাড়ের পর একদিন সে দাঁড়িয়ে উঠল
উড়তে গেলে পুড়তে হয়। তার চেয়েও বেশি জুড়তে হয় বাতাসের সাথে ডানা।
ডানা থেকে বাতাস সরে এলে, বাতাসের থেকে ডানা সরে এলে,
সে পাখি বাসায় থেকে যায়। হয়ত ভালবাসায় থেকে যায়, কান্নায় থেকে যায়,
সদ্য ফুটে ওঠা ডিমের তায়ে থেকে যায়, কখনও কখনও, আকাশের গায়ে থেকে যায়,
বত্রিশ কোটি আছাড়ের পর যে দাঁড়াতে পারল না, সে তেত্রিশ কোটির দিকে ধীরে ধীরে
নিজের কোমর, পিঠ, মাথা এগিয়ে দেয়।
কোনদিনও পায়ে ব্যথা নিয়ে, শত শত ক্ষত নিয়ে আমি অনেককেই একটু বেঁকে হলেও দাঁড়াতে দেখেছি,
তবু শত শত নয়, এক দুটো আছাড়ের পর যাদের মাথায় আঘাত লাগে,
তারা আর কোনদিনও দাঁড়াতে পারে না...
যখন দাঁড়ায় আর কেউ তাকে পাগল বলে না,
কেউ ভেংচি কাটে না,
কেউ বলে না লোকটি মাথা দিয়ে হাঁটে, জিভ দিয়ে শোকে
পা দিয়ে খায়...
কারণ সে একদিন তাকিয়ে দেখতে পায় ,
সে অন্যের মাথা দিয়ে মাটিতে দাঁড়িয়ে আছে,
আর আছাড়ের পর আছাড় খেতে খেতে আমি এখন চুয়াল্লিশ কোটির নামতা লিখতে লিখতে বলে যাচ্ছি,  
শূন্যর নামতা পড়া এর চেয়ে অনেক বেশি কঠিন।  

                                                                                2


অহঙ্কার ধ্বনিত প্রাণফল

ভূমিকা এত চেপে কলম ধরত যে পরের পাতায় লেখা যেত না।
আর আমি এত চেপে মন ধরি, একবার ছাড়া পেলে, আর ফিরতেই
পারে না,
তবুও নাকি সবাই বলে ,মন আছে, লেখার ভিতর।
আর মনের ভিতর যখন লেখা নেই, তখন সবাই বোঝে,
কিছু বলে না। উল্টে রেখে বই, ছুঁড়ে মারে আমার মাথায়,
আমি মাথা ডলতে ডলতে বাড়ি ফিরি। নিজেকে বলতে বলতে
বাড়ি ফিরি, যে আর কোন দিন লিখব না...
তবুও লিখি আবার, সেটাও সবাই জানে। আমার জ্বর হয়,
সর্দি হয়, মাঝে মাঝে মা কালির ভর ও হয় সবাই জানে,
কিন্তু রক্ত পরীক্ষা করলে একদিন দেখা যাবে, সত্যি বা মিথ্যে
মশারির ছোট ছোট ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে, আমায় কত না
পাহাড় কত না সমুদ্র কামড়ে গেছে প্রতিনিয়ত।
এখানে লেখা নেওয়ার আগে, রক্ত পরীক্ষার দরকার। সূচ ফুটিয়ে
এক গ্লাস রক্ত বের করে, লেখাকে মুড়ে তার মধ্যে ফেললেই বোঝা যাবে,
রক্তের মধ্যে লেখা, না লেখার মধ্যে রক্ত আছে।
যদি রক্তের মধ্য লেখা থাকে, লেখা নেবেন না...
আর যদি লেখার মধ্য রক্ত থাকে, জানবেন ওটি

মূষিকের।


13 comments:

  1. আর যদি লেখার মধ্যে রক্ত থাকে, জানবেন ওটি

    মূষিকের

    -বেস্ট।

    ReplyDelete
  2. আহা..... আমি শব্দহীন।অভিষেক আমাকে শব্দে ফেরাতে পারবে তো?? আরও রক্ত চাই।

    ReplyDelete
  3. অনেক ভালোবাসা অভিষেক। তোমার কবিতার অভিনবত্ব, বুনন, বিন্যাস আমাকে ভীষণ আলোড়িত করে। শুভেচ্ছা রইল।

    ReplyDelete
  4. কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলবো .... সত্যিই শূন্যের নামতা বেশি কঠিন .

    ReplyDelete
    Replies
    1. কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলবো ..... এমন লিখতে সত্যিই গোপনে কত রক্ত ঝরে ... আর শূন্যের নামতা অনেক বেশি কঠিন ....

      Delete
  5. কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলবো ..... এমন লিখতে সত্যিই গোপনে কত রক্ত ঝরে ... আর শূন্যের নামতা অনেক বেশি কঠিন ....

    ReplyDelete
  6. মনটা গলে গেল , তোমার বয়ে যাওয়া নদীতে

    ReplyDelete
  7. মনটা গলে গেল , তোমার বয়ে যাওয়া নদীতে

    ReplyDelete
  8. ভালো লাগলো।শূণ্যের নামতা সত্যিই কঠিন…শূণ্যে শূণ্যে মহাশূণ্য।তারপর জানিনা।

    ReplyDelete
  9. পড়লাম। পড়তে হবে আগামী লেখাগুলোও...

    ReplyDelete
  10. হোসাইন সোহাগDecember 8, 2017 at 10:25 PM

    এখানে লেখা নেওয়ার আগে, রক্ত পরীক্ষার দরকার। সূচ ফুটিয়ে
    এক গ্লাস রক্ত বের করে, লেখাকে মুড়ে তার মধ্যে ফেললেই বোঝা যাবে,
    রক্তের মধ্যে লেখা, না লেখার মধ্যে রক্ত আছে

    ReplyDelete
  11. দুটি কবিতাই দারুণ লাগলো।

    ReplyDelete