।। বাক্‌ ১১৭।। রত্নদীপা দে ঘোষ





হরি ওঁ তৎ সৎ  


চখ-খড়ি হাতে

নিজের ছায়ায়। ফেরাতে চাইছি চোখ।   

বারবার পিছলে যাচ্ছে আইবলের পালকওহে ভদ্রাসন ...হামাগুড়ির জিরেত... জমিন ... আজ
কেনো এমন শোকদিন। শোকবেলা। কীসের জোয়ার ... কুয়াশা না কৃষ্ণচূড়ার?

সম্ভবত এক অনন্ত থেকে অন্য গ্রহান্ত দুপুর দুটো কুড়ি গতে। টানাগদ্যে যাত্রা অন্ত।  

অপারছুটি। টগর গ্রামের প্রাইমারি-ইস্কুলটি। দেওয়ালে আঁকারূপকথার মণিমালা

ঢেউ তুলছে মরমিয়া। স্লেট আলোর ফুটবল শিখায়। ফিরতে চাইছে পা।
পারছে না।



পাহাড় স্তবক পেরিয়ে

অবিশ্বাস্য আলোকদ্বার। আগুনদার স্তম্ভের চাইতেও তীব্র।

মেঠোবেঞ্চি পরা অপরূপ আঁচ। চাইতে পারিনে। এমন দুর্দান্ত সলতে পাকানো।

তোরণ যেন। পরতে পরতে টিউলিপ। সুকুমারী প্রপাত। কে যেন এগিয়ে আসছে। তরোয়ালে
ঝনঝনসহ। কে তুমি ... হাসতে হাসতে ... হাসির ওপর ঠোঁট পেতে ... মুখ টিপে ...

আদরটুকু আলগা দিতেছসারা শরীরে মায়া কাঁটা ফুটছে যে গো। তুলসীপাতায় ঘনীভূত হচ্ছেন
নমোস্তুতে দেবদেবীরা। নাম না জানা আনন্দম-শ্রেণি। শ্রেণীকক্ষের মাঝখানে। প্রধান শিক্ষকের সামনে।

একথালা কান্নাপুস্তক খুব পাচ্ছে …

ময়ূরের দিব্যি

বলছি। এই পেখম দলের শহুরে রোয়াক। ভুলেছি।
চিনি-চিনি অলি গলি। আনাচ কানাচে প্রিয়পল অনুপল।
মুহূর্ত দিনের ফুসফুস তেষ্টা। বসতির প্লীহা। যকৃতের ফুটপাথ।
বিছানার সমাজতত্ত্ব। বিশ্বাস করো। সব গিয়েছি ভুলে।

মাথার ভেতর ধীরে ধীরে বাতিল ভিটামিনের তক্তপোশ।
স্নায়ু তন্ত্রের আগাছা। জনপদ প্যাঁচানো অরণ্যগাছ।
জংলী পিচকারির একটি মাত্র ফুঁ... অমনি নিভে যেতেছে
যে বা যাহারা ছিল কাছের। এসোজন। বসোজন

বহুদিনের প্রিয়কলম।
লিখিত। অলিখিতপ্রোটিন পংক্তিমালা।   



বিরাটাকার নভোসবুজ

সেরে। নিয়েছি জ্বলন্ত ডানাস্নান। উড়ছে ছাইগোলাপি। হাড়মজ্জা।
বিরেতের জোব্বা। জেলির পোশাকখানি ধুয়ে যাচ্ছে রমরম কোরে।
রয়েছে বাকি জানালার মেরু ও মেরুদণ্ড। দু’চারটে খনি-কদম।
এইটুকুই ছিল যৎসামান্য যা আমার ডাকসাজের। ছন্দে মেলানো।  

কোমর সমান লম্বা পথে ঘাট। ছড়িয়ে পড়ছে। বেশুমার খইয়ের পরাগ 
শ্মশান থেকে ফিরে। অগোছালো ওদের একটু শাসন দিও তো ...


সন্ধ্যায় সন্ধ্যাতারায়

গ্রহতারা। নিঙাড়িয়া।

যে হাত ধরে আছে আমার। তার হাতখানিও পারছিনে ছুঁতে। ছোঁয়াছুঁয়ির চেষ্টাই বৃথা। চৈতন্য জুড়ে
অচেনা মুক্তাঞ্চল। দিগন্ত ফুঁড়ে অপ্রাণের চুনাপাথর। চিলতে হরিধ্বনি।

উজ্জ্বল আর ঝকঝকে আয়ু-উপপাদ্য ফুরিয়েছে। ফণার ছাপ বাজছে না আর কোথাও

দালানহীন দেবদত্ত, বোধিগাছটি সম্বলথরথর আংশিকে, যাঁর সমগ্রে ভাসছি এখন।

ভাসমান আছি বিস্তারিত। তার গড়ন অপার লালপাড়। বেদমন্ত্রের মেটেকলস


অস্থিকলস। প্রণাম। হরি ওঁ তৎ সৎ। 

1 comment:

  1. চক খড়ি হাতে । পাহাড় স্তবক পেরিয়ে // মন কেমন করা হারানো বেলা একটু উঁকি দিলো যেন।।

    ReplyDelete