বাঁশঝাড়ে ফুল
ধরেছে
একটা ভাবলেশহীন মুখ, রক্তশূন্য
শাদা কাগজে তৈরী দুটো চোখ,
পোকাধরা হলুদকালো দন্তসমুদয়।
হাসছে নাকি এটিই আমার মৃত্যুর
পরোয়ানা, বুঝতে পারছিনা ।
সে আমার দৃষ্টির ভিতরে অথচ পরিমাপহীন দূরত্বে,
আমার
দৃষ্টির অন্তবিশ্ব বহির্বিশ্বে
মস্ত ব্যবধান।
জিজ্ঞেস করলাম, তাকিয়ে রয়েছো কেন, আমি কি এখনও
অপ্রস্তুত?
সে নিশ্চল, বাক্যহীন, তার আর আমার মধ্যে নিয়ত তুষারপাত,
শ্বেততন্তু
জাল, অথচ
উভয়ের কাছে দৃশ্যমান।
দীর্ঘ শক্তসামর্থ্য মনুষ্যাকৃতির কেউ হবে হয়তো বা,
তবে
মনুষ্যজাতির কেউ নয়।
একটা অস্পৃশ্য আতঙ্ক, আমার শরীরে তার কোনো
স্পর্শানুভূতি নেই, আতঙ্কের পিঠে চড়ে নিঃশঙ্ক আমি;
এসো, হাত ধরো,
বিলম্বে অনেক অনিষ্ট।
বাঁশঝাড়ে ফুল ধরেছে, কোথাও বাতাসে বাতাসে
ঘূর্ণিঝড়ের আগাম বার্তা, বিসূচিকা-গন্ধ, থরথরিয়ে বাতাস কাঁপছে,
কাঁপছে
হিন্তালের বন। কে
কাকে দাহ করবে,
বুঝে
উঠতে পারছে না
কেউ, বিদ্যুৎ
হয়ে খেলে যাচ্ছে।
বজ্র হয়ে ফেটে পড়ছে - কে ওই ঘন দীর্ঘ ছড়ানো উদ্দাম-কেশী
কষ্টিপাথরের নারীমূর্তি - কেন তার দুচোখ সমুদ্র!
আমি বুঝতে পারছি না, কখন আমার ঘন্টা বাজবে,
কখন আমি এক্কা-দোক্কা খেলা শুরু করেছিলাম
মনে
পড়ছে না,
খেলতে পারছি না, তবু খেলা বন্ধ
হয় না।
হারবো জেনেও, আমি বিরল যুধিষ্ঠির, পাশা খেলার আহ্বান
উপেক্ষা করতে পারছি কই? বিপক্ষে শাশ্বত শকুনি,
ঊরু
বাজিয়ে বলে চলেছে - “জিতলাম”।
উতলা
হয়ো না। ঠিক
ক্ষণে ঘন্টা বাজবেই। ধৈর্য ধরো।
কখন আসন পালটাপালটি হয়ে গেছে - শকুনি যুধিষ্ঠিরের আসনে,
আর
যুধিষ্ঠির শকুনির। অবিরাম
পাশার দান পড়ছে।
ঊরু বাজিয়ে এবারো জয়োল্লাসে, সেই শকুনি
: ‘হারলাম’।
No comments:
Post a Comment