।। বাক্‌ ১১৭ ।। তাহিতি ফারজানা ।।




আনত বৃক্ষ

১.
এক হাত দূরে
তার সন্তান
কোনদিন ছুঁয়ে দেখেনি।
প্রবল বাতাসে ঘ্রাণেন্দ্রিয় কেঁপেছে
শো শো উত্তেজনায়
তার চোরাপথ বেঁকে গেছে ধানফুল শৈশবে

যেভাবে একটি বীজ থেকে সে
সেভাবে তারই সন্তান
ছিটকে পড়ে উথ্বিত হয়েছে নিরবে
মাটি তাদের একমাত্র ধাত্রী।

তবু তো এখানেই-
গাছজন্ম বলেই
নেই অগোচরের শঙ্কা।


২.
ফিরে ফিরে চুমু খাই
গাছের ফুস্ফুসে
ঢেলে দেই গোপন ইশারা।

গাছ, সবুজ অহং, উন্মত্ত মানবিক দরজা
আমাকে ধারণ করে আলোক কুঠুরিতে
জল দেয় শেকড়পাত্রে।

বহমান বহুবর্ষ ধরে
আমিই কি বেড়ে উঠিনি
গাছের প্লাসেন্টায়!


৩.
কাছে কোথাও পাখিসভা
ঘুমানোর উস্কানি দিচ্ছে পোয়েটস অফ দ্য ফল
চোখের আড়ালে আরোগ্য হওয়া সহজ।
ঘুম-বিচ্ছেদ, সর্বত্র।

কথার ভারে কণ্ঠস্বর ফেইড হয়ে আসে
এই মেহগনি তলে।

পারস্পরিক স্পর্শে নিখিল ছেনে
বিদ্যুৎ
প্রবাহিত হয় দুজনের দেহে।

আমি বলে যাই- আর সে
সবচেয়ে উঁচু ডালটি নেড়ে
প্রত্যুত্তর করে।


৪.
জানাও ছায়ার মাহাত্ম্য
ছুঁয়ে দিলে প্রসারিত হও ভীরু শাখায়-
যেভাবে ভ্রমণরত রোদের দাঁত
জাগিয়ে দেয় ঘুমন্ত নাশপাতিকে।

পৃথিবীর অতল কোমল শেকড়

তোমার উদ্ভিজ্জ ঘ্রাণে
অলক্ষ্যে

নিজেকে শোধন করে হাওয়া।


৫.
নাচের মুদ্রা ঝালিয়ে নিচ্ছে
ঝুলন্ত খড়কুটোর ঘর।
টানা বর্ষণ।
কার দিকে শূন্য তাকিয়ে থেকে
নিজেকে জড়ো করো!

অতীত ভিজে দাঁড়কাক হয়ে আছে
নৈশব্দের কেন্দ্রে পৌঁছে
তার পালকে রঙ চড়াও তুমি।
চারপাশ অস্বীকার করে বিজন হয়ে উঠো।

যেন সতীর্থদের জলকেলি ঠেলে
একটা বৃক্ষ
মুখোমুখি দাঁড়ায় আকাশের।




1 comment:

  1. যেন গাছের ফুস্ফুসে এক্কেক চুমু

    ReplyDelete